বৃহস্পতিবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২২

আ ফা লে র মা ছ

 ০১

মানুষ 'শয়তান' বলে গালি দিতে দিতে শয়তানের দায়িত্ব কমিয়ে দিচ্ছে


০২

আজ বৃষ্টি হলে কাল থেকে জলের ইহকাল শুরু, ঘুম এক পরকালের নাম


০৩

অনেকের কাছে প্রেমিকা শব্দের বাংলা অনুবাদ রোবট যাকে রিমোট দিয়ে নিয়ন্ত্রন করা যায়, স্বামী শব্দের বাংলা অনুবাদ রাখাল যার ইশারা সীমানায় প্রত্যেকটি পশু রাব্বাইক রাব্বাইক বলতে বাধ্য


০৪

গোবরের পদ্মফুল ছদ্মবেশে গোবরই থাকে


০৫

রেজা ভাই একা চলে, সাথে নিয়ে রব, কখনো তাকে সাথে অনিন্দ্য রফরফ


০৬

সমস্যা সমুদ্র হমান, সমাধানের উপায় যেনো ডিঙি নৌকা, তবু সমস্যা সমাধান করতে হবে এক এক করে, একেবারে নয়


০৭ 

অঙ্গ ব্যবহার না করলে অঙ্গহানি ঘটে


০৮

কালো কোনো রঙ নয়— সব রঙকে সে ধারন করে— আল্লা কোনো রঙ নয়— সব রঙকে তিনি ধারণ করেন


০৯

পরিস্থিতি পালটাই কিন্তু দরজা খোলার কাজটি দরজাতেই থেকে যায়


১০

টাকাহীনরে হঠাৎ করে টাকা দিও না প্রভু,তাহলে সে মানুষের মনকে হিরোশিমা নাগাসাকি বানিয়ে ফেলবে— টাকা দিও কাউকে যেনো সে সহনশীল হয়ে উঠে নিজের প্রতি এবং নিজের পারিপার্শ্বিকতার প্রতি


১১

রাতে সূর্যের অস্তিত্ব খুজতে বের হন রেজা ভাই— রাতে সূর্যের অস্তিত্ব মনে নিয়ে বসে থাকার নাম আস্তিকতা


১২

প্রেম মানে প্রিয়জনের মনে ও গতরে ঢলে পড়া— প্রিয়জন সরে গেলে মাটিতে মিশে যেতে হয়— জাস্ট মিশে যেতে হয়— বিদেশি ভাষায় এই মিশে যাওয়ার নাম দেবদাস বা মজনু


১৩

প্রচারে আচার না থাকলে জীবনে এসে সে প্রচার অনাচারের অবয়ব ধারন করে


১৪

সঠিক সময়ে বর্জন করতে পারলে বর্জন অর্জন হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে


১৫

জীবনকে সহজ করার আশায় যে আপনার ঘর করতে আসবে,জীবন কঠিন হয়ে গ্যাছে এই কথা বলে সে পালাবে


১৬

শারীরিক বীর্যে কেউ প্রেগন্যান্ট হলে তার পেট ভর হয় আলস্য ভর করে, আদর্শের বীর্যে কেউ প্রেগন্যান্ট হলে তার মন ভর হয় মানসিক শক্তি বেড়ে যায়


১৭

মানসিকভাবে সমমুখী  দুটি মানুষ পরস্পরকে বিকর্ষণ করে দূরে থাকে— মানসিকতার দিক থেকে ভিন্ন দুটি মানুষ পরস্পরকে আকর্ষণ করে সংসার করে, মানসিকভাবে সমমুখী দুটি মানুষ নির্দিষ্ট দূরত্বে অবস্থান করে রাধাকৃষ্ণ প্রেম করে


১৮

মিথ্যার বাপের নাম মিথ্যা— মিথ্যার মায়ের নাম ক্ষতি কর্মকার


১৯

হুদা আত মুখে যায় না কিন্তু শিশুর হুদা আত মুখেই থাকে— শিশুর মতো নিষ্পাপ যারা তারাও হুদা আত মুখে নিতে জানে 


২০ 

Thinking over nothing is absolutely nothing 


২১

দশের অবস্থাই মূলত দেশের অবস্থা


২২

ব্রেক ফেইল মানুষের সামনে থেকে জাস্ট নিজেকে সরিয়ে নিতে হয়


২৩

লোভ বেশি কাজ করলে ব্রেইন কাজ করে কম


২৪

ঘরে যাওয়া আর ঘুরতে যাওয়া এক কথা নয়

 

২৫

ছোট্ট কিছুকে যারা বড় করতে পারে তারাই দিনশেষে বড় হয়— বড় কিছুকে ধরে রাখা ছোট মনের কাজ

 

২৬

হেসে কথা বলুন— দেখবেন, দেশে রিজার্ভের সূর্য উঠবে— সংসারে নামবে হিজলের ছায়া


২৭

মেয়েদের অনুমান কুকুরের ঘ্রানশক্তির মতো শক্তিশালী


২৮

এই গভীর রাত জানে— জানে আমার চোখের জল— আমি এসেছি মানুষের পাশে দাড়াতে— মানুষকে ভরসা দিতে— মানুষের ভয় দূর করতে— আমাকে ভুল বুঝে তোমরা আমাকে দূরে সরিয়ে দিও না প্লিস— দূরে চলে গেলেও সূর্য হবো— তোমাদের অন্ধকার দূর করে দিয়ে আনবো ফসলি প্রভাত।


২৯

পাহাড়ের মরা ডাল সমতলের জিন্দা ডালের চেয়ে শক্তিশালী


৩০

ভালোবাসতে গিয়ে দেখবে ভালো বাসাটা হারিয়ে গ্যাছে সমাজের ছায়াতলে— ভালোবাসার খাবার ত্যাগ— ভালো বাসার জন্যে চায় আপোষ


৩১

"You are born and you are made up" is not the same idea deon or discipline— In your born discipline your family your society your state will be your somehow comfort zone and you will be estimated a positive ashore— In the way of making up discipline you are completely alone and you have to face small and big verdict hiccup oration— Groggy support you will get but it’s little enough. In your born discipline you the narrative only— You the creative one, an extraordinary creative in your making up discipline and It's the most sedentary way to spend your life and make your life enjoyable strolling Ocean.


৩২

সমস্যা হচ্ছে মাঠের বাইরে কথাবলা লোকের অভাব নাই— মাঠের ভেতরে কাজের লোকের বড়ই অভাব


৩৩

পোষা পাখি ঘরে না ফিরলে হয় পাখি নতুন ঘর পেয়েছে নতুবা পথ হারিয়েছে


৩৪

চোখের সামনে খাবার দেখে সুস্বাদু ভেবে আনন্দিত হবেন না— খাবারটি স্বাস্থ্যের জন্যে উপকারি হলে তা আপনার শরীরের উপাদান হয়ে প্রাকৃতিক উপায়ে আপনার আনন্দ ও প্রশান্তির কারন হবে 


৩৫

যে ভালো থাকে একমাত্র সেই ক্ষমতা রাখে ভালো রাখার— সমাজের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত কত মা স্টেশনে সন্তান বিক্রি করে দেয় রাতের আড়ালে— শুকনো পাতার কাছে সবুজ প্রার্থনা করে কেবলই যারা অবুঝ— প্রাজ্ঞ-জীবন ছুটে চলে সবুজের বিপুলা অক্সিজেনের বনে 


৩৬

দায় মানে কোনো কিছুর উপর অন্যের অধিকার। কন্যাসন্তান পিতা-মাতার কাছে এক প্রকার দায়। প্রতিটি কন্যাসন্তান দায় হয়ে জন্মগ্রহণ করে  যাহাদের শরীরে অদৃশ্যভাবে লেখা থাকে চাহিবার মাত্র ইহার বাহককে দিতে বাধ্য থাকিবেন।


৩৭

তোমার ঠোঁটের মতো প্রিয় কোনো কম্পন হৃদয়ে আমার জমা নেই

তবুও তোমার হৃদয় গলনাঙ্ক ব্রথেল 


Sweet sound of your lip, deemed vibration of yours is acute afar from the storage of mine

But yet your heart is brothel alike, your heart in melting point 


৩৮

ঘরের ইন্দুর বেড়া কাটবে ইডাতো স্বাভাবিক কথা— ইন্দুর ঘরের কাপড় ঘরের বেড়া কেটেই তার নির্ধারিত কাজ বা রুটিন ওয়ার্ক চরিত্রের সাথে করে থাকে— ইন্দুর না বুঝবে ঘর না বুঝবে বাহির— এমনটাই ইন্দুরের ক্লাসিক স্বভাব— অথচ চিরায়ত মহান মানুষ ইন্দুরকে ক্লাসের আদর্শলিপি বইয়ের নামাতা-বানানের স্বাস্থ্য রক্ষার কাজে ব্যবহার করতে চায়— মানুষের চাওয়া আর পাওয়ার মাঝে ঝুলে থাকে শিকারভুলা বিলাই


৩৯

চোখমন অন্ধ হলে সূর্যের আলোতেও আপনি অন্ধকারে


৪০

আদম নবীকে জান্নাত থেকে বের করে দেয়া হলো— নিশ্চয়ই জান্নাত থেকে বের করে দিয়ে তাকে আবার জান্নাতে রাখবেন না— তাহলে তাকে কোথায় পাঠালেন? সোজা কথা, জাহান্নামে! আর জাহান্নামটা কোথায়?  পৃথিবী। ইলমাল ইয়াকিন এবং আইনাল ইয়াকিন বলে আল্লার হুকুমে থাকার নাম জান্নাত আর হুকুমের বাইরে অবস্থান করার নাম জাহান্নাম।


৪১

শ্রেষ্ঠ ভালোবাসাটা পেতে রাজার মেয়ে হওয়া লাগে না— প্রেমিকের রাজা হওয়া লাগে


৪২

যখন কেউ কারন না জেনে সিদ্ধান্ত বলে দেয় তখন সে কানকথা লাগানো মানুষ 


৪৩

পাতার সংসার ততক্ষণ পর্যন্ত সবুজ যতক্ষণ তার সম্পর্ক গাছের সাথে— গাছ ততক্ষণ পর্যন্ত জীবিত যতক্ষণ তার সম্পর্ক শেকড়ের সাথে— শেকড় মাটির উপরে চলে আসলে সবুজের বিলুপ্তি ঘটবে


৪৪

অত্যন্ত বিশ্বাসের সাথে স্ত্রী স্বামীর বিশ্বাস ভাঙতে জানে— স্বামী চৎমকার নির্ভরতায় অন্যের সুরঙ্গে ঢুকতে জানে—তাইতো বলি, স্বামী আর স্ত্রী সম্পর্ক চরম বিশ্রী দেখতে দারুণ সুশ্রী


৪৫

সূর্য মেঘের আড়ালে গেলেও তাপ দেয়, চাঁদ দেয় জোছনা— আড়াল মানে ঘুমিয়ে যাওয়া নয় জনাব— জেগে থাকার হিজরত প্রার্থনা


৪৬

যন্ত্র ব্যবহারের আগে বুঝা যায় না তা ভালো না মন্দ— বিয়ে এমন এক যন্ত্র যা ফিরত দিতে গেলেও যন্ত্রণা দেয়


৪৭

গাধাকে ট্রেনিং দিয়ে দেখুন— উত্তম গাধা হবে— গাধাকে ট্রেনিং না দিয়ে গাধা হিসাবে বাচতে সহায়তা করুন— কিপটাকে দানবির হাজী মোহাম্মদ মহসিনের ওয়াজ করে দেখুন— কিপটা মহসিনকে খুজে বের করবে কিন্তু নিজে হজী মোহাম্মদ মহসিন হবে না


৪৮

You are the poor one may be, your eyes aren’t yet, your eye is a rich kid to aid you and Show you more something


৪৯

আমরা জীবনকে চূড়ান্ত বলে মনে করি— দুধ যদি চূড়ান্ত হতো দই মাখন ঘিকে আমরা পেতাম না— প্রত্যেক রূপান্তরের সূচনাপর্ব রয়েছে— জীবনের রূপান্তর মূলত জীবনের চূড়ান্তরূপ।


৫০

প্রেম প্রিয় উকায়ালি নদী— সাতার জানলে নদীর ভেতরে তুমি কৌশলী তরী— কৌশল হারালে তরীতে হায় মরি মরি

শনিবার, ১৫ অক্টোবর, ২০২২

বান্দরবান এবং নাফাখুম

 কবুতর শান্তির প্রতীক— এমনটাই বলা হয়ে থাকে— এমনটা বলার পেছনে অনেক কাহিনি রয়েছে— ইসলামিকসংস্থা একধরনের কাহিনি বলে— সমাজবিজ্ঞানী একধরনের কাহিনি বলে— রাষ্ট্র বিজ্ঞানীরা নিশ্চয়ই আরেকধারার কাহিনি বলবেন। তবে আমার কাছে একটি কথা খুব ভালো লেগেছে— কবুতর পরকীয়া করে না—  কবুতর সঙ্গী বদল করতে চায় না— সঙ্গী মারা গেলেও নতুন সঙ্গী নিতে বা তাকে দিতে বহু জটিল প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়।তাই কবুতর শান্তির প্রতীক। 


নাফার খুব প্রিয় কবুতর। কারন একটাই। কবুতর পরকীয়া করে না। নাফার খুব ভালো বন্ধু তুন ইয়াত। তুন ইয়াতের সাথে নাফা আজ ঘুমধুম গ্রামে যাবে। বাড়ির বাইরে-টাইরে সে খুব একটা যায় না— যাওয়ার ইচ্ছা হয়। আজ সে যাবেই। 


তারা যাত্রা শুরু করে। পাহাড়ি রাস্তা তাদের চেনা। অল্প সময়ের মধ্যেই তারা পৌঁছে যায় ঘুমধুম গ্রাম। গ্রাম ভালো লেগে যায় তাদের। রাতে তুন ইয়াতের খালার বাড়িতে থেকে যায় নাফা। সকালে বাড়ি ফিরে। সকাল বলতে প্রায় দুপুর হয়ে যায়।


বাড়ি ফিরে নাফা দেখে তার স্বামী হাসেলিয়া অগ্নিমূর্তি ধারন করে আছে— সে বিশ্বাস করতে পারছে না আর নাফাকে— নাফা কোনোভাবেই হাসেলিয়াকে বিশ্বাস করাতে পারছে না তুন ইয়াত তার একজন ভালো বন্ধু জাস্ট— এর বেশি কিছু না। পরিস্থিতি আরও জটিল হতে থাকে— হাসেলিয়ার ঘ্যানঘ্যান ঘ্যানঘ্যানানি বাড়তে থাকে। মেয়েদেরকে মেরুদণ্ড মনে করে এমন পরিবার বাংলাদেশে খুব কম।পাহাড়েও। পারিবারিক অযথা চাপ বাড়তে থাকে নাফার মানসিক পাড়ায়। একদিন সব কিছু উপেক্ষা করে উধাও! কোথায় গ্যাছে নাফা কেউ জানে না! 


হাসেলিয়ার ঘরে নতুন বউ আসে।  তুন ইয়াত তার প্রেমিকাকে বিয়ে করে। নাফা উধাও মানে উধাও— আর তার দেখা নাই। 


জোছনা রাত। মিহিদানার মতো মৃদুমন্দ বাতাস। পাহাড়ি বাহারি পাতায় যেনো রঙের যৌবন উন্মাদ খেলা— এমন সময় ঝর্ণার পাশে পাহাড়ি বৈচিত্র্যময় ফুলের ❀ শাড়ি পরে নৃত্য করছে এক নারী। গ্রামের সবাই ছুটে আসে তাকে দেখতে। মধ্যরাত। তুন ইয়াত তাকে দেখতে পাচ্ছে। হাসেলিয়া পাচ্ছে না। নাফাকে দেখতে পাওয়া একধরনের প্রেস্টিজিয়াস ইসু হয়ে দাঁড়িয়েছে— যারা নাফাকে দেখতে পাচ্ছে তারা নিজেকে অনেক পুন্যবান মনে করছে— আর পুন্যের ভিত্তিতে পাহাড়ে রাজা নির্ধারিত হয়। গ্রামের যেসকল স্বামী তাদের বউকে বিশ্বাস করে কেবল তারাই দেখতে পাচ্ছে ঝর্নানারীর মনভুলানো নৃত্য। তুন ইয়াতের সেই ঝর্নানারীকে চিনতে ভুল হয় নাই— নাফা— নাফা সেই নৃত্যরত নারীর নাম। 

তারপর থেকে সেই ঝর্নার নাম নাফাখুম।


নাফাখুমের চোখ বরাবর ঝুলন্ত ব্রিজ। ব্রিজটা শতবর্ষী দাদির পানখাওয়া দাতের মতো নড়ে কিন্তু পড়ে না। বিজ্রে দাড়িয়ে আছি। ঝরনার জলবাষ্প আমার সমগ্র শরীরে আছরে পড়ছে। রাত প্রায় তিনটা। নাফাখুমবাসী ঘুমাচ্ছে। আমিও ঘুমাতে পারি— ঘুম এক বিশ্রামের নাম। ঝরনার জলবাষ্প আমার অনুভূতির এলাকায় এমন প্রশান্তির ধারা বয়ে দিয়ে যাচ্ছে যা বিশ্রামের অধিক কিছু। কানে আসছে পাহাড়ি পাখির ডাক। এমন ডাক জীবনে প্রথমে কানে বাজছে। খুব সুন্দর মনের মানুষ মারা গেলে পাহাড়ি পাখির ডাক হয়ে যায়— মায়াভরা সুরের রাধাশ্যাম আহবান— যাকে ধরা যায় না,আবার পরিহারও করা যায় না— যেনো প্রদোষ প্রবর প্রদ্যোত।


নাফাকে দেখার জন্যে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসে মানুষ  এই কুয়াশায়ময় শীতল শীর্ষ ঝর্নার কাছে— কেউ পায় কেউ পায় না— কেউ থেকে যেতে চায় নাফাখুম অনিবার্য কালের শেষ রেখার শেষ ইচ্ছাবৃন্ত পর্যন্ত।


বান্দরবান থেকে থানছি। থানছি থেকে রেমাক্রি। রেমাক্রি থেকে নাফাখুম। বান্দরবান থেকে থানছি প্রায় ৯০ কিলোমিটার। থানছি মানে বিশ্রামের স্থান।বান্দরবান থেকে থানছি যাওয়ার আঁকাবাঁকা পাহাড়ি রাস্তা চোখের নিচে নরম শীতল আবহাওয়া নির্মাণ করে নিতে জানে— পাহাড়ি নরম কোমল তুলতুলে সবুজের শরীর মনের গভীরে বাসরের আয়োজন করে নিবে সচেতন মনকে ফাকি দিয়ে। কি বলিব চুলখোলা মেঘ বেগম আর বাতাস প্রিয়ার কথা— যেনো নির্জন বনে প্রিয়তমার ঠোঁটের উপত্যকায় অধর অধিকারের প্রথম প্রশান্তি!


ফাকে একটা কথা বলে নেয়া দরকার। আমার পরিচিত এক ছোট বোন পাহাড় থেকে একটি বিলাই আনে। বিলাই বা ফেলিস ক্যাটাস রাধার মতো রাতে অভিসার করে। রেমাক্রির চেয়ারম্যান মার্কেটে সে প্রায় এক মাসের মতো ছিলো। হঠাৎ একদিন রাতে বিড়ালের কান্না শুনতে পায়। তার ঘুম ভেঙে যায়। তার একটি অসম্ভব ক্ষমতা রয়েছে— তার পায়ের শব্দ শুনলেই বিলাই দৌড়ে আসে। তার পায়ের শব্দ শুনেই বিড়ালটি কান্না রেখে দৌড়ে আসে। বিলাই বা ফেলিস ক্যাটাস রাতে অভিসারে যায়। তাই রাতে তাদের কান্না বাড়ে— পার্টনার খুজতে থাকে। তাদের কান্না মূলত কান্না নয়— শ্যামের বাশি।


বিলাইটিকে সে গ্রামে নিয়ে আসে। ঘুম থেকে উঠে বিলাইটিকে আর খুজে পাওয়া যাচ্ছে না। অনেকদিন বয়ে গেলো— পাওয়া যাচ্ছে নাতো যাচ্ছে না। পাওয়া গেলো— কারের উপরে। কার থেকে নামানো হলো। আবার চলে যায় কারের উপরে। কারের উপরে তাকে খাবার দাবার দেয়া হচ্ছে। বিলিভ ইট অর নট— প্রায় ছয় মাস বিলাইটি কারের উপরে ছিলো। শ্যামা প্রিয় উল্লাস পাহাড়ের বিলাইটিকে রাখতে পারেনি— পাহাড়ের বিলাইকে সে পাহাড়েই রেখে আসে। 


পাহাড়ের বিলাইটি কেনো সমতলে নিজের জায়গা করে নিতে পারেনি তা নিয়ে টিম বাংলাদেশের অনেক বড় মিটিং হয়েছিল। রেজাল্ট আসেনি। এসেছিল অনুমান। তবে আমরা প্রতিজ্ঞা করেছি পাহাড়ের বিলাইকে সমতল- সম্মান-সম্মত করে তুলবো— তাতে বাংলাদেশের বহত ফায়দা হবে।


সিমলার রাস্তা আর বান্দরবানের রাস্তা যেনো সহোদরা— একজন পার্লারে যাওয়া শিখেছে অন্যজন প্রাকৃতিক উপায়ে নিজেকে সজ্জিত করে রেখেছে। মানে কী? মানে খুব সোজা। বান্দরবান এবং তার রাস্তাঘাট এখনো প্রাকৃতিক— তবে প্রাচীন নহে। সেইদিন হয়তো বেশি দূরে নয় যখন দেখবো বান্দরবানের শরীরেরও আধুনিক পৃথিবীর চলমান ছোয়া। তবে নীলাচল( সাজানো পাহাড়) থেকে রাতের পাহাড়কে মনে হয়েছে প্রায় সিমলাময়— মানে পাহাড়ের অলিগলিতেও দিনে দিনে পড়ছে আধুনিক পৃথিবীর ছোয়া। সেই সন্ধ্যা রাতের নীলাচল— তার আঁচল বিছানো বাতাস শরীরে যে প্রশান্তির ধারা বয়ে দিয়েছে তা বজায় থাকবে কোষের কোনায় কোনায় আজীবন— সত্যিই পাহাড় ব্যতীত এমন প্রশান্তির বাতাস অন্য কোথাও পাওয়া যাবে না— এমন বাতাস কোথাও খুজে পাবে নাকো তুমি— বাতাস প্রিয়ার রানী সে যে আমার পাহাড় ভূমি। 


নাফার শরীরে এখনো আধুনিক পৃথিবীর চলমান ছোয়া স্পর্শ করতে পারেনি। আজ সে এসেছে কুয়াশার পোশাকে। অসম্ভব অবলা সৌন্দর্য আজ তার অঙ্গে— কাশফুলের শরীরে ভরা জোছনা পড়লে উপর থেকে যেমন দেখায় তেমন সমাহিত সৌন্দর্য সমাহার নাফার সমগ্র শরীরে— শরীরে তার বাতাবি লেবু আর রজনীগন্ধার মোহমায়া ঘ্রাণ। পাহাড়ি লাতা ডাকছে— সকাল হয়ে এলো— মনে হলো এক পলক। এবার মুখে কথা ফুটে আমার— নাফাকে বলি, চলো আমার সাথে। নাফা হাসে। হাসি তো নয়— যেনো ছাতিম ফুলের গন্ধ উড়ছে আকাশে বাতাসে। আবার ভাবি নাফাকে কেনো আমার সাথে যেতে বলি— আমিও তো থেকে যেতে পারি। আমরা সবই কেনো আমার করতে চাই— আমরা কী হতে পারি না তার কিংবা তাদের।


পাহাড়কে আমাদের মতো করতে গেলে বড় ভুল হয়ে যাবে। পাহাড়ের নিজস্ব প্রান আছে একেবারে নিজের মতো— সবার মতো— আবার সবার থেকে সবচেয়ে আলাদা। থানছি থেকে রেমাক্রি যাওয়ার পথে যে স্বর্গলাভ হয়, রেমাক্রি থেকে নাফাখুম যাওয়ার পথে যে অন্তরলোক অনুভূতির সন্ধান মেলে তা পৃথিবীর কোথাও এমন করে আছে বলে আমার মনে হয় না। নৌকা চলছে— দুপাশে সবুজের আকাশ— সবুজ আকাশের উপরে মেঘময় বাতাসি নীলার চুলের বাহার— পুরাতন বড় বড় পাথর— বাতাসের বিশুদ্ধ উচ্চারণ— নৌকা চলছে— মাটি পুরাতন হতে হতে পাথর প্রাসাদ হয়ে, হয়ে গ্যাছে গাছের নিরাপদ আশ্রয়। কতশত গাছ আছে এই পাহাড়ে বলা মুশকিল। কেউ কেউ হয়তো জরিপ আমাদের সামনে উপস্থাপন করবে কিন্তু তা সত্য নয়— পাহাড়ের ভাষা যারা জানে তারা হয়তো অনুমান করতে পারবে— তবে সঠিক তথ্য অনেক অনেক দূরে।


দেশের দক্ষিণে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের একটি পাহাড়ি নদী সাঙ্গু—  সাঙ্গুকে শঙ্খ নদী বলতে বেশ আরাম লাগে আমার— কর্নফুলীর পর এটি চট্টগ্রাম বিভাগের দ্বিতীয় বৃহত্তম নদী— বাংলাদেশের অভ্যন্তরে যে কয়টি নদীর উৎপত্তি তার মধ্যে শঙ্খ নদী অন্যতম— মিয়ানমার সীমান্তবর্তী বাংলাদেশের বান্দরবান জেলার মদক এলাকার পাহাড়ে সাঙ্গু নদীর জন্ম— বান্দরবান জেলা ও দক্ষিণ চট্টগ্রামের সাতকানিয়া, চন্দনাইশ, আনােয়ারা ও বাঁশখালীর ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে সাঙ্গু সাপের মতো রাবারের দেহ আর সর্পিল ভঙ্গিতে  বঙ্গোপসাগরে গিয়ে মিশেছে— উৎসমুখ হতে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত সাঙ্গুর দৈর্ঘ্য ১৭০ কিলোমিটার— ১৮৬০ সাল— চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামের গেজেটিয়ার প্রকাশকালে ব্রিটিশ শাসকরা ইংরেজিতে এটিকে সাঙ্গু নাম দেন তবে মারমা সম্প্রদায়ের ভাষায় শঙ্খকে রিগ্রাই থিয়াং অর্থাৎ স্বচ্ছ পানির নদ বলা হয়। বান্দরবানের শঙ্খ-তীরবর্তী লােকজনের ৯০ শতাংশই মারমা— যাদের প্রথম এবং প্রধান দেবি বা দেবতা এই শঙ্খ নদী। 


শঙ্খ নদীর মায়াময় শরীর দিয়ে আমরা বয়ে যাচ্ছি রেমাক্রির দিকে। সুন্দরী গ্রাম চোখে পড়ে কিন্তু সময় স্বল্পতার কারনে তাকে এক্সপ্লোর করতে পারিনি। চোখে আসে রাজা পাথর। রাজা পাথরকে ঘিরে বহু কিসসা কাহিনি দাড়িয়ে গ্যাছে। পুর্নিমা রাতে এই পাথরের কাছে মানুষ যা প্রার্থনা করে তাই নাকি পায়। পূর্নিমা রাতে এই পাথরের উপরে বসে ধ্যান করলে বেশ প্রশান্তি প্রশান্তি ফিল হবে বলে মনে হচ্ছিল আমার কাছে— মানুষ নিজের মতো করে ভাবতে পছন্দ করে— মানুষ নিজের মতো করে নিজের দেবতা নির্মাণ করে— পাহাড়িদের কাছে এই রাজা পাথর খুবই আরাধ্য পূজনীয় আত্মা— তারা মনে করে এই রাজা পাথর জীবিত এবং এই রাজা পাথর এবং তার রানী পাথর থেকে  শঙ্খ নদীর সমস্ত পাথরের জন্ম। তাহলে বুঝতে পারছি শঙ্খ নদীতে তিন প্রকার পাথরের দেখা মিলবে— রাজা পাথর, রানী পাথর এবং তাদের সন্তান পাথর। শীতকালে এই পাথরের রাজ্যে শঙ্খজল তেমন থাকে না। ফলে এই নদীতে চলমান ছোট ছোট আন্ডারওয়েট নৌকা চলতে সমস্যা ফিল করে। 


শঙ্খ নদীতে চলতে চলতে কতশত গাছবৃক্ষ চোখে পড়ে— কারো নাম ধরে ডাকতে পারি নাই— একটি গাছ কেবল তার বুক আর পীঠ দিয়ে আমাকে পরিচিত পরিচিত সুখ দিয়েছে— কলা গাছ। কিন্তু এই দুর্গম পাহাড়ের ঢাল থেকে কেমন করে পাহাড়ি পরিশ্রম কলা সংগ্রহ করে ভেবেই অবাক হচ্ছিলাম— তাদের পক্ষে সম্ভব— পাহাড়ের সমস্ত জেনেই তারা পাহাড়ের মানুষ।


একটি কথা শুনে আপনারা আমার সাধারণ জ্ঞানের লেভেল সম্পর্কে ধারনা নিতে পারেন— পাহাড়ে যাওয়ার আগেও জুম চাষ কি জানতাম না— জুম বলতে একটি ফসলকে বুঝতাম যা পাহাড়ের ঢালে জন্মে। পাহাড়ে গিয়ে নিজের চোখে দেখলাম এবং জানলাম জুম হলো ফসল চাষ করার জন্যে পাহাড়ি পদ্ধতি। জুম পদ্ধতিতে বিভিন্ন রকমের ফসল চাষ করতে পাহাড়িদের আজাইরা মাটিনষ্টকারি সার কীটনাশক ব্যবহার করতে হয় না— পাহাড়ে প্রচুর পরিমানে জায়গা এখনো পতিত যেখানে বিভিন্ন রকমের ফসল চাষ করা যায় জাস্ট পারিশ্রমিক খরচে।


নাফাখুম যাওয়ার পর দেখি দারুণ উপভোগ্য বৈচিত্র্যময় ক্ষুধা লেগেছে আমার— আলসার কালচারের কালে এমন অনার্য সুন্দর ক্ষুধা লাগা অবশ্যই আশীর্বাদের ব্যাপার— গোসল করে আসতে আসতে খাবার রেডি— লাল চালের গরম ভাত,পাহাড়ি মুরগির ডিম আর পাহাড়ি ডাল। তিন প্লেট ভাত একাই খেলাম— আরও খেতে যাবো এমন সময় ইসলামের নবীর উপদেশের কথা মনে ফুটে উঠে— একটু ক্ষুধা রেখেই উঠে গেলাম।


নাফাখুমে ১৮ পরিবারের বসবাস— সবাই আদিতে বৌদ্ধ— ইদানিং তারা খৃষ্টান হয়েছে— ১ পরিবার নাফাখুমে কেবল বৌদ্ধ ধর্মের— থানছি বান্দরবানের পাহাড়ি দুর্গম এলাকায় প্রায় মানুষ ইদানিং খৃষ্টান ধর্মালম্বীদের সাথে হাতে হাত রেখে আলোর পথে চলে আসতেছে— এই আলো এমন এক আলো যা চোখে দেখা যায় না মনে উপলব্ধি করা যায় না কিন্তু থিউরি দিয়ে বুঝতে হয়— আরাকান রাষ্ট্র থিউরি। আমি এসব থিউরি ফিউচার কম জানি— আমি পাহাড়ে এসে কয়েকটি শব্দ শিখতে পেরেছি— বাংলা ভাষার শব্দ—


ক্রাও= মোরগির ডিম 

ভি ও= হাসের ডিম 

ক্রা= মোরগি 

হ তে = ঠিক আছে

কলিগ কলিগ= একটু একটু 

লা ফা= চা 


পাহাড়ি কোনো মেয়ে বোরখা পরে না।কোনো ছেলেকে দেখিনি পরতে পাঞ্জাবি— দেখেছি ছেলেমেয়ে একসঙ্গে কাজ করতে একসঙ্গে ব্যবসা করতে। পাহাড়ি ছেলেমেয়েদের শরীরে মেদ নেই— পাহাড় তাদের শরীরকে মেদহীন করেছে— করেছে ক্রিয়াশীল। তবে পাহাড়ি মানুষ ব্যবসা করা শিখে গ্যাছে— শিখে গ্যাছে দুইকে কেমন করে চার বানাতে হয়।


আসেন আসেন, বসেন বসেন, চলো চলো,যাই যাই— এই জাতীয় শব্দ টিমটুরের জাতীয় সঙ্গীত— অথচ আমি এক জায়গায় বসে কাটিয়ে দেই সাত-আট ঘন্টা কখনো কখনো— টিম নিয়ে ভ্রমণ করতে আমার ভালো লাগে না— একা একা ভ্রমণ করতে দারুণ ভালো লাগে আমার— টিম নিয়ে ভ্রমণ করার শিক্ষা আমাকে দেয়া হয়নি— শিখতে পারি নাই— একা অথবা দুইজন মিলে ভ্রমণ উপভোগ করি আমি। কেনো?  অনেক কারন!  সব কারন বলতে চাই না—তবে একটা কৌতুক বলি— শুনুন— এক লোক এক জুতিসের কাছে গেলেন হাত দেখাতে— জুতিস তার হাত দেখে একটি সাবান দিলেন— লোকটি তো অবাক! সাবান কেনো দিলেন জুতিস বাবা!!

বাবা আমাকে সাবান কেনো দিলেন? কাউকে দিচ্ছেন পাথরের আংটি কাউকে দিচ্ছেন রূপার আংটি, আমাকে সাবান কেনো?  

জুতিস বাবা লোকটিকে বললো," আগে হাত ধৌত করে আসেন" 


আসলেই রেজা ভাই, ভ্রমনে যাওয়ার আগে হাত ধৌত করার দরকার আছে। তবে রেজা ভাই ভুলবেনা পাহাড়ের বাতাস— এ যেনো বাতাস নয়— স্বর্গের অপ্সরার কোমল হাত— চাষ করে শরীরে শান্তির আভাস— জেগে উঠে দেহমনে ভালোবাসার প্রিয়তম রাত প্রতাপ সাবাশ।


প্লাবন শেষ। নুহ নবী কাককে পাঠালেন পৃথিবী পর্যবেক্ষণ করে আসার জন্যে। কাক আর ফিরে আসেনি। তারপর কবুতরকে পাঠালেন। কবুতর যথাসম্ভব যথাসময়ে ফিরে আসে। ঠোঁটে করে নিয়ে আসে জলপাইয়ের পাতা।পায়ে তার পেকমাটি। কবুতরের পায়ে পেকমাটি দেখে নুহ নবী বুঝতে পারেন পৃথিবী বসবাসের উপযোগী হয়েছে। সেই সময় নুহ নবী কবুতরের জন্যে আল্লার কাছে দোয়া করেন এবং কবুতর আজ শান্তির প্রতীক।


নাফার পছন্দ কবুতর। কবুতরের পুষ্টিমানভরা মাংসের জন্যে নয়— কবুতরের পোষমানা স্বভাবের জন্যে। নাফা ফিরে আসতে জানে। নাফা এমন পাখি যে বেড়াতে যায় কিন্তু দিনশেষে তার ঘর চায়। নাফাকে হাসেলিয়ারা বুঝতে পারে না— আর বুঝতে পারে না বিধায় সংসারের গভীর গভীরতর অসুখ এখন— কবুতর একবার অতীত ভুলে গেলে আর অতীতে ফিরে যায় না— কবুতর শান্তির প্রতীক—নাফা কবুতর হয়ে বেচে থাকে তুন ইয়াতের বিশ্বাসী আত্মায়।

শুক্রবার, ১৪ অক্টোবর, ২০২২

কেমন তুমি এমন দিনে

 বৃষ্টি তুমি পড়ছো কেনো এমন দিনে 

আমার কথা পৌঁছে দিও তার মনে 

একলা আমি 

একলা থাকি 

একলা হাসি 

একলা ভাসি 

তুমি এলে দুজন হবো ইকো বনে

বৃষ্টি তুমি পড়ছো কেনো এমন দিনে 

লজ্জা পাখি চলে আসো 

বসো তুমি সবুজ বনে

বাজতে থাকো আমার মনে

বাতাস প্রিয় পাতা কনে 

আমার কথা পৌঁছে দিও তার মনে

তাকে নিয়ে সময় হবো নোনা বনে

বৃহস্পতিবার, ৬ অক্টোবর, ২০২২

মেঘপাতা

 বৃষ্টিমাখা পাতা তুমি

বাতাস পেলে নড়ো

ছায়াঘরেও আমায় তুমি

ছাতার মতো ধরো